সূত্র: প্রথম আলো, প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩: ১৭
সারসংক্ষেপ:
ভারতের জন্য ইলিশ মাছের রপ্তানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে ৩,০০০ টন রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে এটি কমিয়ে ২,৪২০ টন করা হয়েছে। এই অনুমোদন ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের জন্য দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৪৮টি প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে মোট ২,৪০০ টন এবং একটি প্রতিষ্ঠান ২০ টন ইলিশ রপ্তানি করবে।
অনুমোদনের প্রক্রিয়া
-আবেদনের সময়সীমা: রপ্তানি অনুমতির জন্য আবেদনের শেষ সময় ছিল সোমবার দুপুর ১২টা। এই সময়ের মধ্যে নতুন ও পুরোনো সব আবেদনপত্র এবং সম্পর্কিত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।
- চূড়ান্ত অনুমোদন: যাচাই-বাছাইয়ের পর ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
- মেয়াদ: এই অনুমতি আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
শর্তাবলী
ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সময় প্রতি বছর যে শর্তগুলো রাখা হয়, সেগুলো এবারে একইভাবে বজায় রাখা হয়েছে। শর্তগুলো হল:
1. রপ্তানিনীতির বিধিবিধান মেনে চলা:প্রতিষ্ঠানের উচিত বিদ্যমান রপ্তানিনীতির সব বিধি মানা।
2. কায়িক পরীক্ষা: শুল্ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ইলিশের কায়িক পরীক্ষা করাতে হবে।
3. রপ্তানিসংক্রান্ত কাগজপত্র দাখিল: প্রতিটি চালান শেষে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দাখিল করতে হবে।
4. নির্ধারিত পরিমাণের বেশি রপ্তানি নিষিদ্ধ: অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ইলিশ রপ্তানি করা যাবে না।
5. অনুমতি হস্তান্তর নিষিদ্ধ:অনুমতি অন্য কাউকে হস্তান্তর করা যাবে না।
6. সাব-কন্ট্রাক্ট নিষিদ্ধ: অনুমোদিত রপ্তানিকারক ছাড়া সাব-কন্ট্রাক্ট রপ্তানি করা যাবে না।
7. সরকারি সিদ্ধান্ত: সরকার যেকোনো সময় রপ্তানি বন্ধ করার অধিকার রাখে।
অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান
এই বছরের জন্য অনুমোদিত ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- **আরিফ সি ফুডস**
- **সততা ফিশ ফিড**
- **নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ**
- **তানিশা এন্টারপ্রাইজ**
- **লাকি এন্টারপ্রাইজ**
- **রুপালী সি ফুডস লিমিটেড**
- **মহিমা এন্টারপ্রাইজ**
- **সেভেন স্টার ফিশ প্রসেসিং কোম্পানি লিমিটেড**
- **বিশ্বাস ইন্টারন্যাশনাল**
- **লোকজ ফ্যাশন** (২০ টন)
এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ভারতে ইলিশ রপ্তানি নিয়ে কিছু নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন। তবে, শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৩,০০০ টন রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে, "বৃহত্তর স্বার্থে এবং সর্বোচ্চ মহলের সিদ্ধান্তে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি করা হচ্ছে।"
তিনি আরও বলেছেন, "প্রতিবছর ৫ লাখ ৩০ হাজার টন ইলিশ উৎপাদন হয়। তিন হাজার টন ইলিশ চাঁদপুর ঘাটের এক দিনের পরিমাণের চেয়ে কম। এটি আমাদের অর্থনীতির জন্যও লাভজনক, কারণ বৈদেশিক মুদ্রা আসবে এবং রপ্তানি না করলে চোরাচালান বাড়বে।"
উপসংহার
এই রপ্তানি অনুমতি দেশের অর্থনীতি এবং ইলিশ মাছের বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দেশের মৎস্য উৎপাদন ও রপ্তানির জন্য সম্ভাবনা উন্মোচন করে।