![]() |
সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন পুনর্গঠন করে সেখানে সব ক্যাডারের প্রতিনিধিত্ব চান ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা। ঢাকা, ৫ অক্টোবরছবি: প্রথম আলো |
২৫টি বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বর্তমান গঠন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং কমিশনের পুনর্গঠন ও সব ক্যাডারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি তুলেছেন। তাঁরা মনে করেন, বর্তমানে গঠিত কমিশনে প্রশাসন ক্যাডারের প্রাধান্য রয়েছে, যা সঠিক প্রতিনিধিত্বের অভাব তৈরি করেছে। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসন ক্যাডারের ৬ জন সদস্যসহ কমিশনের মোট ৮ সদস্যের মধ্যে অন্যান্য ক্যাডারের কোনো সদস্য নেই, ফলে জনপ্রশাসনের প্রকৃত সমস্যা ও বৈষম্যগুলো যথাযথভাবে প্রতিফলিত হবে না।
৫ অক্টোবর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবিগুলো তুলে ধরেন আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের কর্মকর্তারা। তাঁদের মতে, এই ধরনের একপেশে কমিশন বৈষম্য দূর করতে পারবে না, বরং তা আরও গভীর করতে পারে। তাঁরা সরকারের কাছে আবেদন জানান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে সব ক্যাডারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে এবং পাশাপাশি সিভিল সার্ভিসের বাইরে থেকে একজন বিশেষজ্ঞকে কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
প্রতিবাদী কর্মকর্তারা আরও জানান, গত ৩১ আগস্ট পদোন্নতি, পদায়ন, এবং নতুন পদ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন দাবিতে ২৫টি বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তারা একত্রিত হয়ে আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ গঠন করেন। এরপর ৩ অক্টোবর সরকার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে প্রধান করে ৮ সদস্যের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে। তবে এই কমিশনে অন্যান্য ক্যাডারের সদস্য না থাকায় পরিষদের কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কর্মকর্তারা দাবি করেন, ২৫টি ক্যাডারের প্রতিনিধিত্ব ছাড়া এই কমিশন জনস্বার্থবিরোধী হবে এবং তা সিভিল প্রশাসনের আরও বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি তৈরি করবে। তাঁরা বলেন, "আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। সরকারের কাছে পুনর্গঠনের দাবি জানাচ্ছি, রাজপথে নামতে চাই না। তবে আমাদের দাবিগুলো অবহেলা করা হলে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবো।"
এ সময় বিসিএস তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা মনির হোসেন লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন, যেখানে তিনি জানান, কমিশন গঠনের আগে আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদকে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করা হয়েছিল। সরকার তাঁদের আশ্বাস দিলেও, শেষ পর্যন্ত কমিশনে তাঁদের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এছাড়া মনির হোসেন বলেন, "জনপ্রশাসন শব্দের মধ্যে লুকিয়ে আছে শাসন ও শোষণের ধারণা। আধুনিক প্রশাসনে এই ধরনের শব্দের ব্যবহার অবিলম্বে বাতিল করা উচিত।"
এ ধরনের বৈষম্যমূলক কমিশন গঠনকে প্রত্যাখ্যান করে কর্মকর্তারা দাবি জানান, সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন পুনর্গঠন করা উচিত, যাতে প্রশাসনিক উন্নয়ন ও সেবায় সমতা প্রতিষ্ঠা করা যায়।