জাতির পিতা বিতর্কে কার লাভ কার ক্ষতি?


WATCH NOW



অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত এবং উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে দেওয়া মন্তব্য- এই দুটি বিষয় গত কয়েকদিনে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করেছে, দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিক সামসুদ্দোজা সাজেন,  এই বিতর্কিত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছেন।


৭ মার্চ ও অন্যান্য জাতীয় দিবসগুলো আমাদের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ ৭ মার্চের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণার উৎস হিসেবে পরিচিত। এই ভাষণ শুধু রাজনৈতিক নয়, একটি সাংস্কৃতিক ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। তার উপর, জাতীয় দিবসগুলোর বাতিল করার সিদ্ধান্ত দেশবাসীকে হতাশ করেছে, কারণ এগুলো আমাদের আত্মপরিচয়ের অংশ এবং জাতীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করে।


যদি আমরা ইতিহাসের দিকে তাকাই, তবে দেখতে পাবো যে এই দিবসগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যে মুহূর্তে এই দিবসগুলো বাতিল করা হলো, তখন তা দেশবাসীর মধ্যে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে বঙ্গবন্ধু ও তার অবদানকে অবজ্ঞা হিসেবে দেখছেন।


 বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং জাতির জনক, এবং তার অবদান অস্বীকার করা মানে দেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে অস্বীকার করা। সরকারের একজন উপদেষ্টা হিসেবে নাহিদ ইসলামের এমন মন্তব্য দেশের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। এটা সরকারের জন্য রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ জনগণ যখন তাদের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কিত এমন একটি গুরুতর বক্তব্য শোনে, তখন তারা স্বাভাবিকভাবেই অবাক ও হতাশ হয়।

 

আমার মনে হয়, সরকারের উচিত হবে দ্রুত নাহিদ ইসলামের মন্তব্যের জন্য স্পষ্ট একটি ব্যাখ্যা প্রদান করা, এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি সরকারের আনুষ্ঠানিক অবস্থান পরিস্কার করা। বঙ্গবন্ধুর অবদান ও তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিসরে একটি মৌলিক ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সরকার যদি এমন মন্তব্যে স্বচ্ছতা এনে জাতির ঐক্য রক্ষার চেষ্টা করে, তবে তা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে। এছাড়া, জাতীয় দিবসগুলো এবং ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কিত যে ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা জনগণের মতামত অনুযায়ী পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।


 আশা করছি, সরকার এই বিতর্কের পরবর্তী সময়ে জাতির ঐক্য বজায় রাখার জন্য ব্যবস্থা নেবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post