![]() |
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তৃতীয় দফা সংলাপ |
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তৃতীয় দফা সংলাপে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও অন্যান্য দলগুলো নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন এবং নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার গুরুত্বারোপ করেছে। তারা দ্রুত রাষ্ট্র সংস্কার করে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, নির্বাচনের প্রস্তুতি, কমিশন গঠন ও সংস্কার একসঙ্গে কার্যকর করা হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ হবে, কারণ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
তবে তৃতীয় দফা সংলাপে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে ‘দুই ধরনের অবস্থান’ দেখা যায়। বিএনপি দ্রুত নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনী রোডম্যাপ দাবি করলেও জামায়াত সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য দুটি পৃথক রোডম্যাপ চাইছে।
শনিবার দিনের বেলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা। বিএনপি, জামায়াত ছাড়াও অন্যান্য দলের প্রস্তাবে সংস্কার ও নির্বাচনকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে জানানো হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ন্যূনতম ঐকমত্যে পৌঁছানো প্রয়োজন, যা নির্বাচনের টাইমলাইন নির্ধারণ করবে।
এরপর জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, হেফাজতে ইসলাম, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও তাদের জোটসঙ্গীদের সংলাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। জাতীয় পার্টিকে এখনও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এবং আগামী শনিবার আরও কয়েকটি দলকে সংলাপে ডাকা হতে পারে।
সাবেক সংলাপে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। আলোচনা শেষে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম ও মাহফুজ আলম।
নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, সংস্কারের জন্য গঠিত ছয়টি কমিশন রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করবে এবং তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। এরপর সেই প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা হবে।
বিএনপি দ্রুত নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করছে, তবে জামায়াতে ইসলামী সংস্কারকে নির্বাচন থেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে। জামায়াত আগামী ৯ অক্টোবর সংস্কারের বিষয়ে প্রস্তাব প্রকাশ করবে এবং তারা সংস্কার ও নির্বাচনের দুটি রোডম্যাপ চেয়েছে।
গণতন্ত্র মঞ্চও জাতীয় রাজনৈতিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেছে। তারা বলেছে, নির্বাচনের জন্য আন্দোলন নয়, বরং সংস্কারের প্রক্রিয়ায় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য তারা কাজ করছে।
অন্যদিকে, বাম গণতান্ত্রিক জোট সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধন করার উদ্যোগের পক্ষে।
সর্বশেষ, ইসলামী আন্দোলন ছয় সংস্কার কমিশনের সঙ্গে আরও নয়টি কমিশন করার প্রস্তাব দিয়েছে, যা বিভিন্ন সামাজিক বিষয়কে কভার করবে।
তৃতীয় দফা সংলাপের পর রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টি এখন সংস্কার প্রশ্নে গঠিত ছয়টি কমিশনের দিকে। আগামী তিন মাসের মধ্যে কমিশনগুলো কী ধরনের সংস্কার প্রস্তাব করে, সেগুলো রাজনৈতিক দলের পরবর্তী সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।