শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের উত্তেজনা: বর্তমান প্রার্থীরা ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

  

রনিল বিক্রমাসিংহে, সাজিথ প্রেমাদাসা, অনুড়া কুমার দিসানায়েক, নমল রাজাপক্ষে


শ্রীলঙ্কায় আজ স্থানীয় সময় সকাল সাতটায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটি প্রথমবারের মতো নতুন নেতা বাছাইয়ের সুযোগ পাচ্ছে, যিনি দুই বছর আগে ঘটে যাওয়া নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবর্তনের নেতৃত্ব দেবেন।


বর্তমান প্রার্থীরা


রনিল বিক্রমাসিংহে: বর্তমান প্রেসিডেন্ট, যিনি গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশ ত্যাগ করার পর পার্লামেন্টের মাধ্যমে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি নির্বাচনে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। তাঁর প্রচারণা চলাকালে শতাধিক সমাবেশ করেছেন, যা তাঁর রাজনৈতিক শক্তি নির্দেশ করে।


সাজিথ প্রেমাদাসা: বিরোধী দলের নেতা এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রেমাদাসার ছেলে। তিনি একাধিক নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছেন এবং জনগণের মধ্যে একটি ইতিবাচক ইমেজ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর নির্বাচনী সম্ভাবনা শক্তিশালী।


অনুড়া কুমার দিসানায়েক: ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টির নেতা, যিনি সংকটের পর প্রান্তিক অবস্থান থেকে উঠে আসছেন। তিনি মার্ক্সবাদী দলের একজন প্রার্থী এবং ভোটারদের মধ্যে নতুন পরিবর্তনের আশার প্রতীক হয়ে উঠছেন।


নমল রাজাপক্ষে: রাজাপক্ষে পরিবার থেকে আসা, ৩৮ বছর বয়সী এই প্রার্থী শ্রীলঙ্কান পদুজন পেরামুনা (এসএলপিপি) দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাজাপক্ষে পরিবার রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

নুয়ান বোপেজ: পিপলস স্ট্রাগল অ্যালায়েন্সের প্রার্থী, যিনি গণবিক্ষোভের সময় অনুপ্রাণিত হয়ে ভোটারদের সমর্থন অর্জনের চেষ্টা করছেন। দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে।


 নির্বাচনের প্রক্রিয়া 

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মোট ৩৯ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, যদিও নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ার কারণে সংখ্যাটি কমে গেছে। ভোটাররা তিন প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন এবং যদি কোনও প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পান, তাহলে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় দফার ভোট হবে।


 রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

গত কয়েক বছরে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশাল পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। গত অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নির্বাচনে নতুন প্রার্থীদের জন্য সুযোগ তৈরি করেছে। এই নির্বাচনের ফলাফল কেবল নতুন প্রেসিডেন্টের নির্বাচন নয়, বরং দেশটির ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য একটি বড় সূচক হয়ে দাঁড়াবে।


 উপসংহার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা করছে, যেখানে জনগণের প্রত্যাশা ও নির্বাচিত নেতার ওপর দায়িত্ব থাকবে দেশকে সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করার। ভোটের ফলাফল আগামীকাল প্রকাশিত হবে, যা দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে

Post a Comment

Previous Post Next Post