অতীতে রাষ্ট্রপতিরা কে কীভাবে বিদায় নিয়েছিলেন?

 


 বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস রাষ্ট্রপতি ও বঙ্গভবনকে কেন্দ্র করে গঠিত হয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপতির পদে থাকা অনেক নেতার বিদায় কখনোই সুখকর হয়নি। বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে কিছু রাষ্ট্রপতি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন, কেউ পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, আবার কেউ দলের সঙ্গে মানসিক দূরত্বের কারণে পদত্যাগ করেছেন।

 ১. আবু সাঈদ চৌধুরী (১৯৭২-১৯৭৩)

১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি আবু সাঈদ চৌধুরী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার অবস্থানকালে নানা কারণে হতাশা সৃষ্টি হয়। আবু সাঈদ মনে করতেন, তাকে অবহেলা করা হচ্ছে এবং তিনি কার্যকরভাবে ভূমিকা রাখতে পারছেন না। বঙ্গভবনে  অবস্থান করে তিনি এক ধরনের অস্বস্তি অনুভব করতেন।

মাহবুব তালুকদার, যিনি বঙ্গভবনে কর্মরত ছিলেন, তার বই "বঙ্গভবনে পাঁচ বছর" এ উল্লেখ করেন যে, প্রথমদিকে কিছু মন্ত্রী তার সঙ্গে দেখা করতে আসলেও পরে অধিকাংশই তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। আবু সাঈদ চৌধুরী শেখ মুজিবুর রহমানের কিছু সিদ্ধান্তকে গ্রহণযোগ্য মনে করেননি, ফলে তাদের মধ্যে মানসিক দূরত্ব বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতির ফলে তিনি ১৯৭৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন।

 ২. মুহম্মদুল্লাহ (১৯৭৩-১৯৭৫)

আবু সাঈদ চৌধুরীর পদত্যাগের পর রাষ্ট্রপতি হন মুহম্মদুল্লাহ, যিনি তৎকালীন জাতীয় সংসদের স্পিকার ছিলেন।  মুহম্মদুল্লাহর ব্যক্তিত্ব ছিল শান্তিপূর্ণ এবং তিনি সরকারের সাথে কোনো টানাপোড়েন সৃষ্টি করেননি। তার মেয়াদকালে বিশেষভাবে মূল্যায়িত না হলেও তিনি বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন না।  মুহম্মদুল্লাহ ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন, তবে শেখ মুজিবুর রহমান একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে তার মেয়াদ শেষ হয়।

 ৩. শেখ মুজিবুর রহমান (১৯৭৫)

১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার চালু করা হয় এবং শেখ মুজিব পুনরায় রাষ্ট্রপতি হন।

একদলীয় শাসন ব্যবস্থা, যা বাকশাল নামে পরিচিত, শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে বিতর্কিত পদক্ষেপ। তবে, তিনি এই শাসন ব্যবস্থা দীর্ঘকাল ধরে রাখতে পারেননি; মাত্র সাত মাসের মাথায় সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকর্তা তাকে হত্যা করে।

শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন খন্দকার মোশতাক আহমদ।

 ৪. খন্দকার মোশতাক আহমদ (১৯৭৫)

শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট খন্দকার মোশতাক আহমদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন, যা মোট ৮১ দিন স্থায়ী ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মুজিবনগর সরকারের পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন এবং স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রিসভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাকশালের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যও ছিলেন। তবে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে এক অভ্যুত্থানে মোশতাককে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।

 ৫. আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম (১৯৭৫-১৯৭৭)

- খন্দকার মোশতাক আহমেদের ক্ষমতাচ্যুতির পর ১৯৭৫ সালের ৬ নভেম্বর আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি ছিলেন, তবে বাস্তবে রাষ্ট্রক্ষমতা সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের হাতে ছিল, ফলে সায়েমকে 'ক্ষমতাহীন' রাষ্ট্রপতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তিনি সংসদ ও মন্ত্রী পরিষদ ভেঙে সামরিক আইন জারি করেন এবং নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা করেন, যা নজিরবিহীন ছিল। সায়েম তার পদত্যাগের পর "অ্যাট বঙ্গভবন: লাস্ট ফেইজ" বইতে উল্লেখ করেন যে, জিয়াউর রহমানের উচ্চাকাঙ্খা তাকে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য করেছিল। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন সায়েম, যদিও তার পদত্যাগের কারণ হিসেবে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সমস্যা উল্লেখ করা হয়।

৬. জিয়াউর রহমান (১৯৭৭-১৯৮১)

- ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে সরিয়ে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন। ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে প্রধান করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর, জিয়াউর রহমান ছয়টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত ফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিতর্কিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজয়ী হন, যা বিরোধী দলগুলো 'প্রহসনের নির্বাচন' হিসেবে অভিহিত করে। তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান পদ ছেড়ে না দিয়েই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ নেন। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) গঠন করেন এবং ১৯৭৯ সালের ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২০৭টি আসনে জয়লাভ করেন। তবে ১৯৮১ সালের ৩০ মে একদল সেনা কর্মকর্তার হাতে জিয়াউর রহমান নিহত হন।

৭. আব্দুস সাত্তার (১৯৮১-১৯৮২)

- জিয়াউর রহমান হত্যার পর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন উপরাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তার, যিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-সভাপতি এবং সাবেক বিচারপতি। ছয় মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি ৬৬% ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন, তবে নির্বাচনটি নিয়ে বিতর্ক ছিল। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সেনাপ্রধান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের একটি সামরিক অভ্যুত্থানে আব্দুস সাত্তার ক্ষমতাচ্যুত হন।

 ৮. আহসান উদ্দিন চৌধুরী (১৯৮২-১৯৮৩)

- ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সেনাপ্রধান এইচ এম এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা করেন। তিন দিন পর, ৩০ মার্চ, তিনি আহসান উদ্দিন চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত করেন। তবে সামরিক আইনের কারণে আহসান উদ্দিন চৌধুরীর কোনও বাস্তবিক ক্ষমতা ছিল না, কারণ প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের জন্য এরশাদের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। আহসান উদ্দিন চৌধুরী ২০ মাস রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, পরে জেনারেল এরশাদ তাঁকে সরিয়ে দিয়ে নিজেই রাষ্ট্রপতি হন।

 ৯. এইচ এম এরশাদ (১৯৮৩-১৯৯০)

-১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি আহসান উদ্দিন চৌধুরীকে অপসারণ করে জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরশাদের নেতৃত্বে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যা বিতর্কের জন্ম দেয়। তাঁর শাসনকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শক্তিশালী হয়ে উঠতে শুরু করে এবং একত্রিত হয়ে আন্দোলনে নামলে, ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন।

 ১০. বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ (১৯৯০-১৯৯১)

নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন, যার মূল দায়িত্ব ছিল সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি জয়লাভ করে। সাহাবুদ্দীন আহমদ দ্বাদশ সংশোধনী পাসের পর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির পদ ছাড়েন এবং সুপ্রিম কোর্টে ফিরে যান। ১৯৯১ সালের ১০ অক্টোবর তিনি প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে ফিরে আসেন এবং ১৯৯৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পদ থেকে অবসর নেন।

 ১১. আব্দুর রহমান বিশ্বাস (১৯৯১-১৯৯৬)

- ১৯৯১ সালের ৮ অক্টোবর আব্দুর রহমান বিশ্বাস জাতীয় সংসদের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তিনি বরিশালে আইনজীবী এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত, এবং ১৯৭৭ সালে বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে তিনি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন এবং পরবর্তীতে আব্দুস সাত্তার সরকারের মন্ত্রিসভাতেও ছিলেন। ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ৪ এপ্রিল ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদের স্পিকার হন। তার রাষ্ট্রপতি পদমেয়াদ ১৯৯৬ সালের ৮ অক্টোবর শেষ হয়।

১২. সাহাবুদ্দীন আহমদ (১৯৯৬-২০০১)

- ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সাহাবুদ্দিন আহমদকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয় এবং তিনি ৯ অক্টোবর ২০০১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তিনি ‘জননিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নে সই করতে অস্বীকৃতি জানান, যা তার এবং তৎকালীন সরকারের মধ্যে তিক্ততা তৈরি করে। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ অভিযোগ আনেন। সংসদীয় ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সীমিত হলেও সাহাবুদ্দিন আহমদের নিরপেক্ষ ভূমিকার জন্য প্রশংসা অর্জন করেন।

 ১৩. বদরুদ্দোজা চৌধুরী (২০০১)

- ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশে ১৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। কিন্তু ২০০২ সালের ২১ জুন তিনি পদত্যাগ করেন, যখন বিএনপি সংসদে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব তোলে। 

বিএনপির সংসদীয় দলের বৈঠকে অনেক সদস্য তার পদত্যাগের দাবি জানান এবং ইমপিচ করার হুমকি দেন। মাত্র সাত মাস দায়িত্ব পালন করার পর কেন তাকে বিদায় নিতে হয়েছিল, সে সম্পর্কে সংবাদপত্রে নানা কারণে আলোচনা হয়। 

এতে উল্লেখিত কিছু কারণ ছিল:

- জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন না করা।

- রাষ্ট্রপতির বাণীতে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে উল্লেখ না করা।

- বিরোধী নেত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতির ছেলে এবং সংসদ সদস্য মাহী বি. চৌধুরীর তোরণ নির্মাণ করা।

- রাষ্ট্রপতির বিভিন্ন বক্তব্যে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ ব্যবহার না করা।

এছাড়া, শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিএনপির অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।

১৪. ইয়াজউদ্দিন আহমদ (২০০২-২০০৯)

- বদরুদ্দোজা চৌধুরীর পদত্যাগের পর বিএনপি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহমদকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করে, এবং ২০০২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি শপথ গ্রহণ করেন। ২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার পর তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানের দায়িত্বও নেন, যা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে। 

তার রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পদ্ধতি বিতর্কের জন্ম দেয়, এবং বিএনপির কিছু নেতা তার ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেন, বিশেষ করে ২০০৭ সালে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ থামাতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে। আওয়ামী লীগের মহাজোট সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর ইয়াজউদ্দিন আহমদ রাষ্ট্রপতির পদ থেকে বিদায় নেন।

১৫. জিল্লুর রহমান (২০০৯-২০১৩)

- ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর জিল্লুর রহমান রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তিনি নবম জাতীয় সংসদের সদস্য এবং সংসদ উপনেতা ছিলেন। ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জিল্লুর রহমান রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। তার রাজনৈতিক জীবন ছিল দীর্ঘ ও উল্লেখযোগ্য। ২০১৩ সালের ২০ মার্চ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে, বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

 ১৬. আব্দুল হামিদ 

- জিল্লুর রহমানের অসুস্থতার কারণে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন আব্দুল হামিদ। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র ব্যক্তি, যিনি পরপর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ছিলেন। প্রথম মেয়াদে ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল এবং দ্বিতীয় মেয়াদে ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী রাষ্ট্রপতি হিসেবেও পরিচিত।

১৭. মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু 

বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি ২৪ এপ্রিল ২০২৩ থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।


উপসংহার

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও তাদের শাসনকাল রাজনৈতিক ইতিহাসে নানা উত্থান-পতনের সাক্ষী। এই ইতিহাস রাষ্ট্রের রাজনৈতিক দিকনির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং ভবিষ্যতেও দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে প্রভাবিত করবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post