ফাইল ছবি |
২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের একটি সংস্থা জানাচ্ছে, দেশে প্রায় দুই হাজার ৩৭৫ কোটি পিস ডিম উৎপাদন হয়েছে। প্রতিটি ডিম উৎপাদনে খরচ প্রায় ১১ টাকা ধরা হয়েছে, যা পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় দ্বিগুণ। অন্যদিকে, সরকারের আরেকটি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দৈনিক ডিমের উৎপাদন ভোগের তুলনায় বেশি দেখানো হচ্ছে। এর ফলে ডিমের উৎপাদন ও খরচের তথ্য অতিরঞ্জিত হতে পারে। এ বাস্তবতায় আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডিম দিবস ২০২৪, যার প্রতিপাদ্য ‘ডিমে পুষ্টি, ডিমে শক্তি, ডিমে আছে রোগমুক্তি’। এ উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, এবং ওয়াপসা-বিবি যৌথভাবে কর্মসূচি আয়োজন করেছে।
আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মিজ ফরিদা আখতার উপস্থিত থাকবেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর এবং সভাপতিত্ব করবেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, একজন মানুষ গত বছর প্রতিদিন ১২.৭ গ্রাম ডিম ভোগ করেছে, ফলে দৈনিক ভোগের পরিমাণ প্রায় দুই হাজার টন। অন্যদিকে, দেশে প্রতিদিন সাড়ে ছয় কোটি পিস ডিম উৎপাদিত হচ্ছে, যা ওজনে তিন হাজার টন ছাড়িয়েছে। ফলে ভোগ ও উৎপাদনের মধ্যে ফারাক রয়েছে।
সম্প্রতি ভারত থেকে সাড়ে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যেখানে এক পিস ডিমের উৎপাদন খরচ পাঁচ-ছয় টাকা। আমদানির পর বাংলাদেশে ভোক্তাদের কাছে তা সাত-আট টাকায় পৌঁছাচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ৫০ বছরে ডিমের প্রাপ্যতা ৩৩ গুণ বেড়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জনপ্রতি ডিমের প্রাপ্যতা ১৩৫.০৯টি, যা চাহিদার তুলনায় ৩১টি বেশি। ১৯৭০ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র চারটি।
ডিমের উৎপাদন বেশি হলেও দাম কেন বেশি, এ প্রশ্নে কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, ‘ডিমের দাম নিয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উৎপাদন খরচ ১১ টাকা দেখানো হলেও ছোট ও প্রান্তিক খামারে তা ১০ টাকা এবং বড় কম্পানির ক্ষেত্রে সাড়ে আট টাকা। আমদানি করা ডিমের দাম আট টাকার নিচে, কিন্তু সরকার ১২ টাকা নির্ধারণ করেছে। বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।’
ডিমের সাশ্রয়ী মূল্য মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সহায়ক হলেও, দাম বেশি হওয়ায় তা গরিবের খাবারের তালিকা থেকে সরে যাচ্ছে। বিপিএ-এর অভিযোগ, বড় কম্পানিগুলো অতিরিক্ত মুনাফা করছে।