সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা আপাতত স্থগিত করেছে সরকার। চলতি জানুয়ারি থেকে ভাতা কার্যকর করার পরিকল্পনা থাকলেও অর্থনীতির অস্থির পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিশ্লেষকদের মতে, মহার্ঘ ভাতা চালু হলে মূল্যস্ফীতি বাড়ার পাশাপাশি সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি হতে পারে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে ১০ থেকে ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার খসড়া প্রস্তুত করেছিল। এর বাস্তবায়নে এক অর্থবছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হতো। তবে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য রাখতে এ উদ্যোগে সায় দেয়নি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। ফলে বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়েছে।
গত অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি এবং চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলায় ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির ফলে জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও মহার্ঘ ভাতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়। এমন পরিস্থিতিতে সরকার আপাতত ভাতা চালু থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, সংকটময় এই সময়ে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুচিত। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন জানান, বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে এ উদ্যোগ সমাজে বৈষম্য ও মূল্যস্ফীতি বাড়াবে। একই মত প্রকাশ করেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, সরকারি চাকরিজীবীরা ইতোমধ্যেই বেসরকারি খাতের তুলনায় ভালো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব বলছে, মহার্ঘ ভাতা চালু হলে নতুন অর্থবছরের বেতন-ভাতা খাতে ব্যয় প্রায় ৯৬ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াবে। তবে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফিরে এলে ভবিষ্যতে বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।