প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্বাধীনতা, ভোটাধিকার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বহুবার আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলে ১৯৭২ সালে বাহাত্তরের সংবিধান রচিত হয়, যা নতুন আশা এবং স্বপ্নের প্রতীক ছিল। কিন্তু সেই সংবিধানও দীর্ঘমেয়াদী স্বৈরশাসকের জন্ম দেয়।
জনগণের অধিকার ও বিপ্লব
স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদ ও বিদ্রোহ বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান, যার ফলে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন, একটি অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে নতুন সাংবিধানিক ব্যবস্থার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছে। জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা একটি মৌলিক দাবি।
সাংবিধানিক অধিকার
প্রাচীন কাল থেকেই জনগণের বিপ্লব করার অধিকারকে জন্মগত অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মার্কিন বিপ্লবের ক্ষেত্রে এটি স্পষ্টভাবে দেখা যায়, যেখানে জনগণ নিজেদের অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনে শাসকদের উৎখাত করেছে। নতুন সংবিধান রচনার দাবি তাই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
নতুন সংবিধানের দাবি
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবি উঠছে। অধ্যাপক আলী রীয়াজ যেমন বলেছেন, পুরনো সংবিধান কার্যকরী না হলে নতুন স্বৈরশাসকের উত্থান ঠেকানো সম্ভব নয়। তরুণ লেখক রিফাত হাসানও একটি সর্বদলীয় অভিভাবক কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রক্রিয়া ও চ্যালেঞ্জ
নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার একটি কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়ন হবে? রাজনৈতিক মেরুকরণ এবং জনগণের আস্থাহীনতার কারণে সংবিধানের পুনর্লিখন একটি চ্যালেঞ্জ।
উপসংহার
নতুন সংবিধান প্রণয়ন একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, তবে এর বাস্তবায়ন বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও আইনগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। সুতরাং, জনগণের ঐক্য ও সচেতনতা ছাড়া এই প্রক্রিয়া সফল হওয়া সম্ভব নয়।