অর্থনীতির শ্বেতপত্র তৈরির কার্যক্রম শুরু
শ্বেতপত্র বা "হোয়াইট পেপার" হলো একটি নীতিগত নথি যা যুক্তরাজ্যের সংসদীয় ব্যবস্থার অংশ হিসেবে পরিচিত। এই ধরনের নথিতে সাধারণত সরকারের নীতিগত প্রস্তাবনা থাকে, যা অধিকতর আলোচনার সুযোগ তৈরি করে।
ইনভেস্টোপিডিয়া অনুযায়ী, উনবিংশ শতাব্দীর ব্রিটেনে, পার্লামেন্ট রিপোর্টের প্রচ্ছদ সাধারণত নীল রঙের থাকত। কিন্তু যদি রিপোর্টের বিষয়বস্তু সরকারের জন্য কম গুরুত্বপূর্ণ হতো, তা সাদা প্রচ্ছদে প্রকাশিত হতো এবং এগুলোকে বলা হতো হোয়াইট পেপারস।
বাংলাদেশে এই প্রথার প্রচলন সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। জাতীয় জ্ঞান কোষ বাংলাপিডিয়া অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে শ্বেতপত্র রাজনৈতিক দলগুলোর কুকীর্তির দলিল হিসেবে প্রকাশিত হতো, যা সরকারের নীতিগত প্রস্তাবনা নয়।
বর্তমানে, বাংলাদেশে নতুন শ্বেতপত্র তৈরি হচ্ছে, যা সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার বিশ্লেষণ করবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এই কমিটির প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন।
ড. ভট্টাচার্য জানান, কমিটি ইতোমধ্যেই অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। কমিটির সদস্যদের নাম প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হবে এবং অনুমোদনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে শ্বেতপত্র তৈরির কাজ শুরু হবে।
শ্বেতপত্রের উদ্দেশ্য হলো দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, সরকারের কৌশলগত পদক্ষেপ, জাতিসংঘের টেকসই অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে এ শ্বেতপত্র সুপারিশসহ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
নতুন সরকারের সামনে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও বিভিন্ন সংকট মোকাবেলার চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ব্যাংক খাতের সংস্কার, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়গুলো এই শ্বেতপত্রে উঠে আসবে।
উল্লেখযোগ্য যে, সরকার সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে শ্বেতপত্রের সাহায্য পাবে, যা ভবিষ্যতে দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনায় সহায়ক হবে।