আসসালামু আলাইকুম, আমার দেশের প্রতিটি মানুষের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জানাই।
আপনাদের দোয়া ও সমর্থন আমাকে আজকের সাকিব আল হাসান হিসেবে গড়ে তুলেছে। আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি তাদের, যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং আহত হয়েছেন। তাদের ও তাদের পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। স্বজন হারানোর বেদনা কোনো কিছুতেই পূরণ করা সম্ভব নয়, এবং সেই ত্যাগের প্রতি আমাদের চিরকালীন শ্রদ্ধা রয়ে যাবে।
এই সংকটময় সময়ে আমার সরাসরি উপস্থিতি না থাকায় যারা কষ্ট পেয়েছেন, তাদের অনুভূতির প্রতি আমার গভীর সম্মান রয়েছে এবং আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি আপনাদের জায়গায় থাকলে হয়তো আমিও একইভাবে মনঃক্ষুণ্ন হতাম।
আমি অল্প সময়ের জন্য মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলাম। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রধান কারণ ছিল আমার এলাকার মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করার সুযোগ তৈরি করা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিজ এলাকার উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখা বেশ কঠিন, তাই সংসদ সদস্য হিসেবে আমি সেই সুযোগ পেয়েছিলাম। তবে আমার প্রধান পরিচয় সবসময়ই একজন ক্রিকেটার হিসেবে, আর ক্রিকেটই আমার হৃদয়ে।
আপনাদের সমর্থনেই আমি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের সম্মান অর্জন করতে পেরেছি। যখনই আমি মাঠে ব্যাট ধরেছি, মনে হয়েছে আপনারা সবাই আমার সঙ্গে ব্যাট ধরেছেন। গ্যালারি থেকে আপনাদের উচ্ছ্বাস, টেলিভিশনের সামনে ভিড় জমানো, সবকিছু আমাকে শক্তি এবং অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
আমি জিতলে, আপনারা জিতেছেন। আমি হেরে গেলে, আপনারাও হেরেছেন। খুব শিগগিরই আমি আমার শেষ ম্যাচটি খেলতে যাচ্ছি, এবং এই দীর্ঘ যাত্রার শেষ অধ্যায়ে আপনাদের পাশে চাই। আপনারা আমার এই জার্নির নায়ক, তাই বিদায়বেলায় আপনাদের সঙ্গে নিয়ে আমি এই গল্পের ইতি টানতে চাই। সেই মানুষগুলোর সঙ্গে থাকতে চাই, যারা আমাকে ভালো খেলতে উদ্বুদ্ধ করেছে, যাদের চোখে আমার সাফল্যে আনন্দ ছিল এবং ব্যর্থতায় ছিল দুঃখ।
আমি আশা করি এবং বিশ্বাস করি, এই শেষ মুহূর্তে আপনারা সবাই আমার সঙ্গে থাকবেন, এবং একসঙ্গে আমরা এই গল্পের শেষটা গড়ে তুলব।