যে কারণে ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহী নন মোদি: ভারতের দুর্বলতা কোথায়?

   

১. বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব

 শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বেড়েছে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে, যা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অবস্থানকে দুর্বল করেছে। এই পরিস্থিতিতে ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক ভারতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং নরেন্দ্র মোদি। কোলাজ: যুগান্তর


 ২. ইসলামী শক্তির উত্থান

হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশে ইসলামী রাজনৈতিক শক্তির উত্থান হয়েছে, যা ভারতের জন্য উদ্বেগজনক। মোদি যদি ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন, তবে এই বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে, যা ভারতের নিরাপত্তার জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে।


 ৩. সার্কের পুনরুজ্জীবনের আলোচনা

ড. ইউনূস সার্কের কার্যকারিতা পুনরুজ্জীবনের পক্ষে। কিন্তু ভারত সার্ককে গুরুত্ব দেয় না, কারণ এর মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। এটি ভারতকে দ্বিধায় ফেলে দেয় এবং তারা ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক এড়িয়ে যায়


 ৪. ভোটব্যাংক এবং রাজনৈতিক কৌশল

ভারতের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বাংলাদেশ বিষয়ক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিজেপির জন্য একটি ট্রাম্পকার্ড হতে পারে। বাংলাদেশে অস্থিরতা বাড়লে বিজেপি মুসলিম ভোটারদের কাছে আরও বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারে। এ কারণে মোদি ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে আগ্রহী নন


 ৫. সীমান্ত সমস্যার অবনতির আশঙ্কা

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে। সীমান্তে ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর ঘটনা আন্তর্জাতিক আলোচনায় এসেছে, যা ভারতের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।


 ৬. ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ভারতীয় নীতির সমালোচনা

ড. ইউনূস ভারতের নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় কথা বলেছেন। তিনি ভারতকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ভারতকে প্রভাবিত করবে। তার এই মন্তব্যের কারণে ভারতীয় সরকারের কাছে ইউনূসের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে।


৭. ভারতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগ

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন, বাংলাদেশে ইসলামপন্থিদের উত্থান ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে, যা ভারতের স্বার্থের বিরুদ্ধে।


 ৮. আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রভাব

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, ভারত কূটনৈতিকভাবে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি মোকাবেলায় মোদি সরকার কি পদক্ষেপ নেবে, তা নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে। ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করা মোদির জন্য রাজনৈতিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে


 উপসংহার

মোদি এবং ইউনূসের সম্ভাব্য বৈঠক না হওয়ার পেছনে বাংলাদেশের পক্ষে একাধিক কারণ  রয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ইসলামী শক্তির উত্থান ভারতীয় সরকারের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ। এ কারণে মোদি ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহী নন এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য অপেক্ষা করছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post